সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, হত্যা, লুটপাটের ঘটনায় প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি এবং সরকারের প্রতি এসব অত্যাচার নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, একটি চিহ্নিত মহলের উদ্দেশ্যমূলক সন্ত্রাস ও নিপীড়নের কারণে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে বিধায় সকল শান্তিপ্রিয় ও গণতন্ত্রমনা মানুষ এতে ভীষণভাবে শঙ্কিত। তাছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্রসহ সর্বত্র চলছে দখল ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এক ঘৃণ্যতৎপরতা। এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও পালন করছে রহস্যজনক নীরব দর্শকের ভূমিকা। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অজয় রায় ও সাধারণ সম্পাদক ড. হায়াৎ মামুদ গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনের আগে থেকে বিশেষ করে নির্বাচনের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘু জনগণের ওপর সারাদেশে যে বেপরোয়া হামলা, লুটপাট ও ধর্ষণ প্রতিদিন ঘটে চলছে, তাতে দেশবাসীর সাথে আমরা হতবাক ও প্রচণ্ডভাবে ক্ষুব্ধ। নির্বাচনের পর প্রায় দুই সপ্তাহ চলে গেছে; কিন্তু এ বর্বরতা না কমে বরং বাড়ছে। দেশে কোন সরকার আছে বলে মনে হয় না। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যারা সরকার গঠন করেছেন তারা নিজেদের মাস্তান ও দুষ্কৃতকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় দর্শক মাত্র। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। বিবৃতিতে তারা সরকারের কাছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি জানিয়ে দেশবাসীর প্রতি প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সারা যাকের ও সেক্রেটারি জেনারেল লিয়াকত আলী লাকী গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের ঘটনা জাতি হিসেবে আমাদের খাটো করেছে । বিশ্বের দরবারে বাঙালি ও বাংলাদেশকে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। অবিলম্বে এসব হামলা বন্ধের জন্য তারা দাবি জানান। এছাড়া বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, জাতীয় হিন্দু পরিষদ, মাইনরিটি রাইটস কমিশন বাংলাদেশ এসব ঘটনার প্রতিবাদ জনিয়েছে।
সংবাদ, ১৪ অক্টোবর ২০০১