মিনতি দেবী তার ভোটটা দিতে পারলেন না। সাতকানিয়ায় ছনখোলা কেন্দ্রে তার ভোট দেওয়ার কথা ছিলো। আশি বছরের মিনতি দেবীর পক্ষে পাঁচ মাইল পাহাড়ি জনপদ অতিক্রম করে ভোট দেয়া সম্ভব হয়নি। মিনতি দেবীর মতো ননী বালা, অপূর্ব দেব, সত্যপদ রায়, বিষ্ণু রায়েরও একই অবস্থা। এ বছর পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়। সাতকানিয়া থেকে বাঁশখালীর যাত্রাপথের রাস্তাটির
অবস্থা এতোই নাজুক যে, বলার ভাষা নেই। নির্বাচনের দিন সাতকানিয়া শহর পার হয়ে দেখা যায়, পথে পথে দাঁড়িয়ে আছে হিন্দু নর-নারী। সাংবাদিকদের গাড়ি দেখে থামিয়ে, তাদের আকুতি একটাই⎯ ‘আমরা জানি না কোন কেন্দ্রে ভোট দেব।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতকানিয়ার প্রায় ৪০ হাজার সংখ্যালঘু ভোটারের মধ্যে ভোট দিতে পেরেছেন মাত্র ১০ ভাগ,তাও অনেক কষ্ট করে খুঁজে নিতে হয়েছে কেন্দ্র। পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ভোট নষ্ট করা
হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের ভোটাধিকার থেকে। অভিযোগ রয়েছে, যেখানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট রয়েছে তাদের সেন্টার নিয়ে যাওয়া হয়েছে পাঁচ মাইল দূরে। তারা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে, জামায়াত নেতারা সে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। নৌকার পক্ষের কোনো ভোটার কার্ডও পৌঁছেনি সংখ্যালঘু শ্রেণীর কাছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ২ অক্টোবর ২০০১
কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন

মন্তব্য করুন