সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে। নেত্রকোনায় পূজামণ্ডপে হামলা করে সন্ত্রাসীরা ৩টি প্রতিমা ভেঙ্গে দিয়েছে। পটুয়াখালীর চরাঞ্চলে চলছে ত্রাসের রাজত্ব। রাজবাড়িতে ৩ সংখ্যালঘুর দোকানে ডাকাতি হয়েছে। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকা থেকেও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
নেত্রকোনায় নির্বাচনোত্তর সহিংসতা দিন দিনই বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতে জেলাশহরে দুর্গামূর্তি ভাংচুর এবং বেদে বহর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
একদল দুর্বৃত্ত বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের মালনি রোডে (পাটপট্টি) অবস্থিত সর্বজনীন দুর্গা পূজামণ্ডপে ৩টি নবনির্মিত মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে। এ ব্যাপারে পূজা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সীতাংশু বিকাশ বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনার পর দুর্গাপুজা নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের আশংকা আরও বেড়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে অন্য একদল দুর্বৃত্ত শহরের রাজুর বাজারে ১৫/২০ টি বেদে পরিবারের ওপর হামলা চালায়। সূত্র জানায় চাঁদাবাজি ও মেয়েদের উত্যক্ত করার সময় বহরের লোকেরা সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর এ হামলা চালানো হয়। এছাড়াও ওই রাতে জেলা শহরের মেছুয়া বাজার ও মালানি রোডে বেশ কয়েকটি দোকানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে । পুলিশ মামুন (১৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
জেলার চরাঞ্চলীয় এলাকা রাঙ্গাবালিতে গত ৮ দিন ধরে বিরামহীনভাবে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে অমানবিক নির্যাতন। এদের বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসছে না। পুলিশের লোকবল কম বিধায় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
রাঙ্গাবালি এলাকা থেকে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন এ প্রতিনিধিকে জানায়, ভেড়িবাঁধ সংলগ্ন ৩১টি ঘর প্রকাশ্য দিবালোকে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অনেক মহিলার শালীনতাহানি ঘটানো হয়েছে। পুরুষরা গ্রাম থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। মহিলাদের ভিন্ন এলাকায় সরিয়ে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজবাড়ি শহরের ৩ জন সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর দোকানে ডাকাতি হয় এবং ডাকাতদল দোকানে রক্ষিত নগদ টাকাসহ প্রায় ১ লাখ টাকার মালামালসহ পালিয়ে যায়। এ সময় শহরে পুলিশ পাহারা থাকলেও পুলিশ ডাকাতদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ছিল রাজবাড়ি শহরের হাটের দিন। এ দিন রাজবাড়ি শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা, পরিমল কুমার সাহা, সুকুমার সাহা সারা দিন বেচাকেনার পর নগদ টাকা দোকানে রেখে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যায়। এরা তিন জনই মুদি দোকানদার।
সংবাদ, ১৩ অক্টোবর ২০০১