বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মসজিদে অবস্থানের অনুরোধ উপেক্ষা এবং নামাজ পড়ার নিয়ম নিয়ে বিরোধের জেরে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন স্থানীয় এক যুবক। কুপিয়ে অপর হাতেরও দুটি আঙুল ফেলে দিয়েছেন।
১২ নভেম্বর শুক্রবার এশার নামাজের পরে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা ইমামের নাম মাওলানা মো. ইয়াকুব আলী বেপারী (৩৫)। তিনি জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের বাইতুন নুর জামে মসজিদের ইমাম এবং ওই উপজেলার তিলের চর গ্রামের মৃত আজাহার আলী বেপারীর ছেলে।
ঘটনার পর পরই অভিযান চালিয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত যুবক বাবলু মাঝিকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে। বাবুল উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুরের মৃত ফরিদ উদ্দিন মাঝির ছেলে।
গ্রেপ্তারের পর বাবুলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হামলায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টার দিকে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শাহজাহান হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি ৪-৫ দিন আগে অভিযুক্ত বাবলু মাঝি মসজিদে থাকার জন্য ইমামের কাছে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু ইমাম তাতে রাজি হননি। তাছাড়া এই ইমামের নামাজ পড়ানো হয় না বলে তিনি অভিযোগ করতেন। এই নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সর্বশেষ মসজিদে থাকতে না দেওয়ার কারণে দা দিয়ে কুপিয়ে ইমামের হাত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন বাবলু মাঝি। খবর পেয়ে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পিতভাবেই ইমামকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা চালান বলে বাবলু মাঝি স্বীকার করেছেন। তিনি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার একটি মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা খতিয়ে দেখছি হামলাকারী বিশেষ কোনো মতাদর্শের অনুসারী কিনা। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা আহতের স্বজনরা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।
বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, শুক্রবার রাতে ইমাম ইয়াকুব আলী ওই মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বাবলু মাঝি ধারালো অস্ত্র নিয়ে ইমামের ওপর হামলা চালান।
তিনি বলেন, হামলায় ইমামের বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ডান হাতেরও দুটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইমামকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে সড়ক পথে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।