সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী দুর্গামাতা ও কালীমাতা মন্দিরের নামের প্রায় ৮০ বিঘা দেবোত্তর সম্পত্তি জাল দলিল ও ভুয়া পত্তনির নামে জবরদখল করে নিয়েছে একদল সন্ত্রাসী চক্র। একদিকে জোরপূর্বক সন্ত্রাসীরা কেটে নিচ্ছে দেবোত্তর সম্পত্তির ফসল, অন্যদিকে সম্পত্তি রক্ষা করতে আদালতের আশ্রয় নেয়ায় ওই সন্ত্রাসীচক্রের দ্বারা প্রাণনাশের হুমকিতে মন্দিরের সেবাইত বিবেকানন্দ ঘোষ পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। মন্দিরের সেবাইত বিবেকানন্দ ঘোষ কনক জানান, পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার বিলচান্দক গ্রামের রাজ্জাক, আফজাল, সামছুল সরকার, মোন্তাজ মোল্লা, শাজাহান, নাজিমউদ্দিন, এলাহি সরকার, আবদুল খালেক, আজিজুল ও রমজান আলী জাল দলিল ও পত্তনির মাধ্যমে মন্দিরের নামের প্রায় ৮০ বিঘা ফসলি জমির মালিকানা দাবি করে তা গ্রাস করার নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি জানান, ঐতিহ্যবাহী পোতাজিয়া ঘোষ পরিবারের শ্রীশ্রী কালীমাতা দুর্গামাতার নামে ১শ’ ২০ বিঘা দেবোত্তর সম্পত্তি রয়েছে, যার মধ্যে সিংহভাগ সম্পত্তিই ফরিদপুর উপজেলার বিলচান্দক গ্রামে। তিনি আরও জানান, দেবোত্তর সম্পত্তির ফসলের ওপর নির্ভর করেই পুরুষানুক্রমে এই মন্দিরে দুর্গাপূজা, কালীপূজাসহ বাৎসরিক সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। কিন্তু ফসল হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সব পূজা পার্বন। বিবেকানন্দ ঘোষ বলেন, জমিতে বীজ বপন করে তার বর্গাদার, আর অস্ত্রের মুখে ফসল কেটে নিয়ে যায় ওই সন্ত্রাসীচক্র। সম্প্রতি আদালত উল্লিখিত সম্পত্তি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে রায় দিয়ে আদেশ প্রদান করলে উক্ত সন্ত্রাসী চক্র ক্ষিপ্ত হয়ে তার বর্গাদারদের বেদম মারপিট করে। তিনি অভিযোগ করেন ওই সন্ত্রাসীচক্রের সঙ্গে যোগাসাজসে বিলচান্দক গ্রামের আরেক সন্ত্রাসী হাতেম আলী বাদি হয়ে মন্দিরের ৪ জন সেবাইতসহ ১৯ জনকে আসামি করে ফরিদপুর থানায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে পুলিশ দিয়ে তাদের হয়রানি করাচ্ছে। পুলিশ ভয়ে পোতাজিয়া ঘোষবাড়ি এখন পুরুষশূন্য। একদিকে সন্ত্রাসীদের প্রাণনাশের হুমকি অন্যদিকে গ্রেফতার এড়াতে ঘোষ পরিবারের সদস্যরা ভিটেমাটি ছেড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রতিনিয়ত আর পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে।
সংবাদ, ২৯ মে ২০০২