ঈশ্বরগঞ্জ পৌরশহর সহ উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নে বিএনপি উগ্রপন্থীদের ভয়ভীতি ও হুমকিতে সারা বাংলাদেশের মত ঈশ্বরগঞ্জেও সংখ্যালঘুরা হয়ে পড়েছে চরমভাবে আতঙ্কগ্রস্থ। সরকার পরিবর্তনের সংবাদ শুনেই ঈশ্বরগঞ্জে বিএনপি নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের ওপর চালায় অমানুষিক-নির্যাতন, লুটপাট, চাঁদা আদায় ও ভয়ভীতি। যে কারণে হিন্দু সংখ্যালঘুদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মাত্র ৪ দিন বাকি থাকলেও ঈশ্বরগঞ্জে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আতঙ্কগ্রস্থ সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতার মাঝে দুর্গাপূজা হবে কি হবে না এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পেরে দুর্গামূর্তি ও মণ্ডপ তৈরি করেনি। বিএনপি উগ্রপন্থীদের হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে সংখ্যালঘুরা দুর্গাপূজার আগ্রহ সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেছে। অনেক সংখ্যালঘু এ উপজেলা ছেড়ে নিরাপত্তার আশায় অন্যত্র চলে যাচ্ছে। ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে শুরু করেছে সংখ্যালঘু সদস্যরা। শারীরিক মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সংখ্যালঘুরা প্রাণ ভয়ে মুখ খুলছে না। এদের মাঝে বিরাজ করছে নীরব ক্ষোভ, হতাশা ও নিরাশা। এদিকে ময়মনসিংহ-৮ ঈশ্বরগঞ্জ আসনে চারদল তথা বিএনপি মনোনীত নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য নূরুল কবীর শাহীন দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি সংখ্যালঘুদের নির্যাতন না করার ও সর্বপ্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিহার করে দলীয় আদর্শে চলার নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন। কিন্তু বাস্তবে কে শোনে কার কথা! চারদলীয় জোটের কর্মীরা অনবরত চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। আর সংখ্যালঘুরা হচ্ছে এদের টার্গেট। যে কারণে এ উপজেলায় দুর্গাপূজা হবে কি হবে না এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সংখ্যালঘুরা।

দৈনিক মুক্তকন্ঠ, ১৭ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন