ছবি কৃতজ্ঞতাঃ প্রথম আলো

প্রকৃত আসামির নাম আবু সালেক, আর কারাগারে যিনি রয়েছেন তার নাম জাহালম। আসামি আবু সালেকের বিরুদ্ধে দুদক সাড়ে আঠারো কোটি টাকা আত্মসাৎ – এর মামলা করেছে। কিন্তু চেহারা মিলের কারণে দুদক এবং পুলিশ বাহিনী প্রকৃত আসামি আবু সালেককে গ্রেফতার না করে, করেছেন দরিদ্র শ্রমিক জাহালমকে। যে জাহালম নিজের নাম পর্যন্ত সাক্ষর করতে পারেন না।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ প্রথম আলো

জাহালম গ্রেফতার হয়ে জেল খাটার তিন বছর পর দুদক বলছে জাহালম নিরপরাধ। অথচ গ্রেফতারের আগে থেকেই জাহালম বলে এসেছেন তার নাম জাহালম। টাকা আত্মসাৎ – এর কোন ঘটনা তিনি জানেন না। কিন্তু বাংলাদেশের দুঃখ পুলিশ বাহিনী এসব কোন অভিযোগ কানে তোলেনি। দৃশ্যত এখন পর্যন্ত কৌতুক প্রতিষ্ঠান দুদকও তলিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি আসামির বক্তব্যকে। অথচ শুরু থেকেই জাহালমের নাম এবং ঠিকানার সাথে প্রকৃত আসামি আবু সালেকের কোন মিল ছিলো না। ছিলো শুধু চেহারায় সামান্য মিল।

জাহালমের ভাই শাহানূর মিয়ার বক্তব্য অনুযায়ী, “আমার ভাই যিনি নিজের নামই সাইন করতে পারে না, তিনি ফাঁসানো মামলায় ৩ বছর ধরে জেলে। আমরা মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি, কোনমতে পেটে ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। আসল আসামি আবু সালেককে সন্ধান করে পাওয়া যায় ঠাকুরগাঁ। তাকে পাওয়ার পরে দুদক এই মামলায় চলাকালীন সমস্ত সাক্ষী এবং ব্যাংকের দেয়া সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। আমি দুদকে গিয়ে জানতে চাই আমার ভাইয়ের এখন কী পর্যায়ে? শিবলী স্যার আমাকে বলেন তাদের তদন্ত চলছে। তাদের টিম ঠাকুরগাঁয়ে চলে গেছে। তারা তদন্ত রিপোর্ট তারা আদালতে পাঠিয়ে দিবে। এরপরই আমার ভাই মামলা থেকে রেহাই পাবে।”

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক জানান তারা আদালতে জাহালমকে নিরপরাধ প্রমাণ করবেন। এবং এই মামলার ফলে জাহালমের যে আর্থিক এবং সামাজিক ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপুরণ যাতে হয় সেটার জন্যেও মানবাধিকার কমিশন চেষ্টা চালাবে।

এদিকে জাহালমের মা সরকারের কাছে আবেদন করেছেন তার ছেলেকে যাতে ছেড়ে দেয়া হয়। তার ছেলে নিরাপরাধ। তিনি অসহায় হয়ে শুধু কাঁদেন।

সূত্রঃ প্রথম আলো (২৭ জানুয়ারী)

 

মন্তব্য করুন