গতকাল বিএনপির একদল কর্মী আরবাব গ্রামে হামলা চালাইলে গোসাইপুর গ্রামের রমজান আলীর পুত্র সুমন(১৭) নিহত ও পাঁচজন আহত হয়। হামলাকারীরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি লুট করে। রাজশাহী জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি সমর্থকরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার অপরাধে দলের নেতা কর্মী ও সর্মথক এবং সংখ্যালঘুদের উপর চড়াও হয় এবং বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়াছে। পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করিতেছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপিসহ চারদলের সন্ত্রাসীদের হামলায় শতাধিক আওয়ামী কর্মী-সমর্থকসহ নিরীহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন আহত হইয়াছে। জামালপুর নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক সহিংসতায় শুক্রবার সরিষাবাড়ি উপজেলায় বানিয়াজানের আওয়ামী লীগ কর্মী কালুর (২৫) হাত-পায়ের রগ বিএনপির সন্ত্রাসীরা কাটিয়া দিয়াছে। একই ভাবে তাহারা পিংনার কুমারপাড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী হেলালের (২৭) পায়ের রগ কাটিয়া দিয়াছে। সন্ত্রাসীরা আওনা ও পিংনা ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকান-পাট ভাংচুর করে। শেরপুরে গত কয়েকদিনে নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষে জেলার বহু আওয়ামী লীগ সমর্থক কর্মী ও সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হইয়াছেন। তাহাদের বাড়ী-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহ ভাংচুর,লুটপাট ও বেদখল করা হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে। কুমিল্লা নির্বাচনের পর জেলার দেবীদ্বার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, লুটপাট, মন্দির ভাংচুর করা হইতেছে। শনিবার বিকালে কুমিল্লা শহরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ধামতি (দক্ষিণ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান সরকার উপরোক্ত অভিযোগ করেন। বিএনপি সমর্থিত সন্ত্রাসীরা শুক্রবার রাত্রে উপজেলার কাঞ্চনের সংখ্যালঘু ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ২০টি বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ,ভাংচুর ও লুটপাট করিয়াছে। নেত্রকোনা কালিয়াজুরী উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের লেপসিয়া বাজারে শনিবার সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং সংখ্যালঘুদের কয়েকটি দোকান বন্ধ করিয়া দেয়। রংপুর (দক্ষিণ) জাতীয় পার্টির (এ) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বদরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মারপিট করে। মেহেরপুর গত শুক্রবার রাতে মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংখ্যালঘু খ্রীস্টান সম্প্রদায় নেতা সোনা মিয়া ও খোকন মল্লিক সহ ৬ জনের বাড়ীঘর ভাংচুর করা হইয়াছে। পিরোজপুর জেলা শহর ও শহরতলীতে পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট জেলার মোড়েলঞ্জের হোগলাপাশা ও বনগ্রাম ইউনিয়নের তিনশতাধিক ভীত হিন্দু কিশোর-তরুণী আশ্রয় লইয়াছে। উক্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের কারণে অধিকাংশ যুবক-যুবতী বাড়ী ছাড়া। পিরোজপুর শহরের সীমান্তে বলেশ্বর নদীর অপর পাড়ের হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম গুলিতে গত মঙ্গলবার ভোটের পরের দিন হইতে সন্ত্রাস শুরু হয়।

দৈনিক ইত্তেফাক, ৭ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন