পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম, রাজবাড়ি এবং হোগলাপাশা ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বেশ কিছু পরিবার বিএনপি-জামাত ক্যাডারদের অত্যাচারে পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আশ্রয় নিয়েছে। ফলে এসব এলাকার সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া স্থানীয় সংখ্যালঘুদের ওপরও কমবেশি অত্যাচার হওয়ায় তারা চরম নিরাপত্তাহীতায় ভুগছে। অনেক পরিবার স্থায়ীভাবে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অত্যাচার অপমানের ভয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে জানা যায়। পিরোজপুর শহর লাগোয়া নদীর পশ্চিমপাড়ের ইউনিয়ন গুলোতে সংখ্যালঘু এবং নৌকা সমর্থকদের মারধর, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, আ.লীগ অফিস ভাংচুর, তরুণী-যুবতীদের সম্ভ্রমহানির চেষ্টা করা হয়েছে। ভয়ে দিশেহারা বহু হিন্দু পরিবার তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে পিরোজপুর সদর ও নাজিরপুর উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে স্বধর্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এ কারণে জেলার সর্বত্র সংখ্যালঘুদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্বাচনের পর দিন ২ অক্টোবর থেকে হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর, দলীয় অফিস তছনছ, দোকান লুটপাঠ, চাঁদাবাজি হয়েছে বলে জানা যায়। সদর উপজেলার দুর্গাপুর, টোনা, কদমতলায় সংখ্যালঘুদের হয়রানি করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। ইন্দুরকানী থানার বাঘেরহাটে কুকুরের গলায় বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর মতো জঘন্য কাজ করা হয়েছে। নাজিরপুর উপজেলার কচিয়া, মালিখালী, দেউলবাড়ি-দোবরা, দীর্ঘা, শ্রীরামকাঠী এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, লুটপাট, ভাংচুর, হত্যার হুমকিসহ যুবতী-কিশোরীদের সম্ভ্রমহানির ভীতি প্রর্দশন করা হয়েছে। মঠবাড়ীয়া উপজেলায় ছিনতাই করা হয়েছে হিন্দু রমণীর গলার চেইন। উক্ত এলাকার জনৈক বৃদ্ধ হিন্দু ভদ্রলোককে উলঙ্গ করে গোপন অঙ্গে রং লাগানো হয়েছে। জলা বাড়ির মৃত দ্বারকানাথের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করা হয়েছে। বরিশাল-৭ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ শহীদুল হক জামাল বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় কোন সহিংস ঘটনা ঘটেনি। দুএকটি যা ঘটেছে তা ব্যক্তিগত ও পূর্ব শত্রু তা। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই। এছাড়া অধিকাংশ ঘটনাই রটনা এবং অতিরঞ্জিত। আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একদল অসৎ লোক এ ধরনের গল্প রটাচ্ছে।
ভোরের কাগজ, ১২ অক্টোবর ২০০১