দুর্গাপূজার সময় খুলনার রূপসার মহাশ্মশান ঘাট মন্দির থেকে ১৮টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছিল৷ এখন ওই মন্দিরের জমি দখলের অপতৎপরতা শুরুর অভিযোগ উঠেছে৷

তারা চিতার পাশেই বাঁশ পুঁতে জমি নিজেদের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন মন্দির সংশ্লিষ্টরা৷ কিছুদিন আগে চিতার পাশে মন্দিরের জমিতে একটি বাথরুম তৈরি করা হয়েছিল৷ প্রশাসনের হস্তক্ষেত্রে তা ভাঙা সম্ভব হয়েছে৷ তবে মন্দিরের পূজারিদের উদ্বেগ তাতে কমেনি৷

১৮টি বোমার প্রসঙ্গে মহাশ্মশান ঘাট মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার নাথ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘র‌্যাব নিজেরাই খবর পেয়ে মন্দিরের প্রধান গেট থেকে ১৮টি বোমা উদ্ধার করে৷ ওই ঘটনায় কারা জড়িত সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরে আর আমাদের কিছু জানানো হয়নি৷ আমরা শুনেছি, বোমাগুলো নাকি অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল৷”

বোমা উদ্ধার করা হলে তাদের মন থেকে আতঙ্ক এখনো দূর হয়নি বলে জানালেন তিনি, ‘‘এখন নতুন করে কয়েকদিন আগে মহাশ্মশানের চিতার পাশে রাতের আঁধারে কে বা কারা কিছু বাশ পুঁতে রেখে গেছে৷ এটা মন্দিরের জমি দখলের অপতৎপরতা বলেই আমাদের মনে হচ্ছে৷ আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি৷ তারা বলেছে, কালীপূজার পরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে৷ এর কিছুদিন আগে চিতার পাশেই একটি বাথরুম তৈরি করেছিল পাশের বাসিন্দারা৷ বিষয়টি প্রশাসনকে জানানোর পর তারা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে এসে উচ্ছেদ করে দিয়েছে৷ সব কিছু মিলিয়ে খুলনা শহরের অন্যতম বড় এই মন্দিরটিকে ঘিরে এক ধরনের অপতৎপরতা চলছে বলেই আমাদের মনে হচ্ছে৷”

দূর্গাপূজার নবমীর দিন, অর্থাৎ গত ১৪ অক্টোবর বিকেলে খবর পেয়ে র‌্যাব বোমাগুলো উদ্ধার করে৷ একটি কাগজের প্যাকেটে ১৬টি এবং খোলা অবস্থায় ২টি বোমা উদ্ধার করা হয়৷ সেগুলো ছিল হাতে তৈরি দেশীয় বোমা৷ ওই রাতেই রূপসা নদীর তীরে ইকোপার্কের পাশে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়৷

র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোসতাক আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বোমা উদ্ধারের ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি৷ আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি৷” কারা, কী উদ্দেশ্যে এই বোমা রেখেছিল তা এথনা জানা গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখনো তো তদন্ত পর্যায়ে আছে, ফলে ধারণা করে কিছু বলা ঠিক হবে না৷ তবে ওই সময় দেশকে অস্থিতিশীল করতে কিছু তৎপরতা শুরু হয়েছিল, এটা তারই অংশ হতে পারে বলে আমাদের ধারণা৷”

বোমা উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ কোনো তদন্ত করছে কিনা জানতে চাইলে খুলনা মেট্টোপলিটন পুলিশের সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, “ওই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল৷ র‌্যাবের পাশাপাশি পুলিশও এই ঘটনার তদন্ত করছে৷ তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি৷ এমনকি কী উদ্দেশ্যে সেখানে বোমা রাখা হয়েছিল, সেটাও বের করা যায়নি৷” জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “কেউ যদি মন্দিরের জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা করতে চায়, সেটা পারবে না৷ আমরা দ্রুতই সেটা অপসারণ করে দেবো৷”

ডিডব্লিউ বাংলা

মন্তব্য করুন