সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনায় পাহাড়ের উপজাতীয় জনগণ শঙ্কিত বোধ করছে। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে উপজাতীয়দের জন্য কল্যাণকর কোন প্রতিশ্রুতি না থাকায় উপজাতীয় সচেতন মহল কিছুটা উদ্বিগ্ন। দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের তুলনায় অনেক কমসংখ্যক উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর মনে পার্বত্য চুক্তির আগের মতো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির শিকার হওয়ার সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালী কয়েক জন উপজাতীয় নেতা জানান, ৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের আগে ২১বছরের নিপীড়ন-নির্যাতনের তিক্ত অভিজ্ঞতা পাহাড়িরা এখনও ভোলেনি। সেই সময়কার জাতীয় রাজনীতিতে নিপীড়নের প্রতিবাদে সোচ্চার ভূমিকা পালনকারী ও পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনকারী আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংসদ নির্বাচনে জনসংহতির বৈরী আচরণের কারণে যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে তা উপজাতীয়দের অসহায়ত্বকে বাড়িয়ে তুলেছে। দীর্ঘ ২১ বছরের নিপীড়নের অভিজ্ঞতা নিয়ে উপজাতীয় জনগণ বর্তমান সময়কে খুব একটা অনুকূল ভাবতে পারছে না।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে, একজন উপজাতীয় জনপ্রতিনিধি বলেন, বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে উপজাতীয়দের জন্য কোন প্রতিশ্রুতি নেই। তারপরেও জনসংহতির চাপের মুখে তারা জোট প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের ঘটনা এবং এ ব্যাপারে জনসংহতি সমিতির দুর্ভাগ্যজনক নীরবতা উপজাতীয়দেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। তারা রাজনৈতিক নিপীড়নের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক হানাহানিরও আশঙ্কা করছেন।

ভোরের কাগজ , ১৩ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন