চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কদমতলী গ্রামে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় চুরি-ডাকাতি সম্প্রতি আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করেও ভুক্তভোগীরা সুফল পাচ্ছে না। ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাত নামতেই চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকে। ঘটনার পর ঘটনা ঘটে চললেও থানা পুলিশ একজন ডাকাতকেও ধরতে না পারায় এলাকাবাসী অসহায় বোধ করছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কদমতলীসহ সংখ্যালঘু এলাকায় এমন কোনদিন নেই একটা না একটা চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে না। চুরি-ডাকাতিগ্রস্ত এমন অনেক পরিবার জানায়, তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অভিযোগ করে জানানো হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত চিহ্নিত কোন চোর-ডাকাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের রহস্যজনক নীরবতার কারণে সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্র আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, গত ২৯শে জুলাই কদমতলীর মহাজনপাড়া এলাকার রাজা মিয়ার ছেলে কুখ্যাত ডাকাত আবদুল আলিম প্রকাশ আবদু সদলবলে পার্শ্ববর্তী সংখ্যালঘু হিন্দু পাড়ার স্বপন সেনের বাড়িতে রাতের আঁধারে সিঁদ কেটে প্রবেশ করে। গৃহকর্তা এ সময় ঘুম থেকে জেগে উঠে বাতি জ্বালায়। তখন গৃহকর্তার সাথে ডাকাতের ধস্তাধস্তি শুরু হলে এক পর্যায়ে চোরের মুখোশ খুলে যায় এবং তাকে গৃহকর্তা চিনে ফেলে। এ মুহূর্তে তার দলের অন্য সদস্যরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে ধরা পড়া চোরকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে গৃহকর্তা স্বপন সেন বাদি হয়ে গত ৩১শে জুলাই রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করলে একই গ্রামের চিহ্নিত ডাকাতদলটি ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহকর্তাসহ তার পরিবারকে শায়েস্তা করার জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।

ডাকাতদলের সদস্যরা সেই সুযোগ নেয় গত ৬ই আগস্ট রাতে। গৃহকর্তা স্বপন সেনের স্ত্রী মাধুরী সেন বাড়ির নিকটবর্তী পুকুরে থালাবাসন ধুতে গেলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা দলটি অতর্কিতে মাধুরীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। মাধুরীর চিৎকারে লোকজন ছুটে আসায় হামলাকারীদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তখন হামলাকারীরা মাধুরীকে চরমভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

কদমতলীর হিন্দুপাড়াসহ আশপাশের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামসমূহে কিছু চিহ্নিত অপরাধী দীর্ঘদিন থেকে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে বহুবার পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ নির্লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ কারণে কুচক্রটি মারাত্মক ধরনের অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়।

সংবাদ, ২৪ আগস্ট ২০০১

কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন

মন্তব্য করুন