বান্দরবান খ্রিস্টান মিশনারিদের পরিচালিত ফাতেমা রানী খ্রিস্টান পল্লী ছাত্রী নিবাস ও সিস্টার ভবনে শুক্রবার গভীর রাতে সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় দুইজন নৈশপ্রহরী গুলিবিদ্ধসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নয়জনই দশম শ্রেণীর ছাত্রী। ডাকাতরা সিস্টার ও ছাত্রীদের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট এবং ছাত্রীদের নির্বিচারে মারধর করেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তিপক্ষ জানিয়েছে। জানা যায় বান্দরবান শহরের পূর্বপার্শ্বে ডনবসকো বিদ্যালয় সংলগ্ন ফাতেমা রাণী খ্রিস্টান পল্লীর অরণ্যঘেরা ছাত্রী নিবাস ও তত্ত্বাবধায়ক সিস্টারদের ভবনে রাত ১টার দিকে সশস্ত্র ডাকাতরা হামলা চালায়। সিস্টার সুধা ও সিস্টার পুষ্প জানান, কালাঘাটার দিক থেকে আসা ১০-১২ জনের সশস্ত্র ডাকাতদলটি দরজা ভেঙ্গে সিস্টার ভবনে ঢুকে পড়ে। নৈশ প্রহরীরা বাধা দিলে ডাকাতরা তাদের গুলি করে। এ সময় নৈশপ্রহরী আন্তনী ত্রিপুরা, জেয়াং প্র মারমা গুলিবিদ্ধ হন। অপর নৈশ প্রহরী রোমিও ত্রিপুরাকেও ডাকাতরা প্রচণ্ড মারধর করে আহত করে। ডাকাতরা সিস্টারদের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আলমারি ও বাক্সের চাবি নিয়ে লুটপাট চালায়। তবে তারা নগদ টাকা ও সোনা রূপার অলংকার ছাড়া অন্য কোন মালামাল নিয়ে যায়নি। সিস্টার ভবনে নির্বিঘ্নে লুটপাট শেষ করে সন্ত্রাসীরা ছাত্রী নিবাসে হানা দেয়। ছাত্রী নিবাসে আদিবাসী ছাত্রীরা থাকে। দশম শ্রেণীর ছাত্রী সিসিলিয়া জানায়, সন্ত্রাসীরা দরজা-জানালা ভেঙ্গে দশম শ্রেণীর ছাত্রীদের ঘরে ঢুকে তাদের নির্বিচারে লাঞ্ছিত করে এবং গলার চেইন ও হাতের চুড়ি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ছাত্রীরা চিৎকার করতে থাকলে ডাকাতরা তাদের বেদম প্রহার করতে থাকে। ডাকাতদের প্রহারে শেফালি ত্রিপুরা, সুমতি, মাইনেরুং, কুসুমবালা তঞ্চঙ্গা, মারিয়া, জাহতরুং, রুইি মা ও ব্রিজিতা ত্রিপুরা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে শেফালী ত্রিপুরাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুই জন নৈশ প্রহরীর শরীর থেকেও অস্ত্রপাচার করে গুলি অপসারণ করা হয়েছে।
প্রথম আলো, ১৪ অক্টোবর ২০০১
প্রথম পাতা টাইমলাইন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ বান্দরবান খ্রিস্টান পল্লী ছাত্রী নিবাসে ডাকাতি হামলায় আহত ১২